You are currently viewing কিভাবে লিলিয়াম ফুল এর বাল্ব সংরক্ষণ করতে হয়

কিভাবে লিলিয়াম ফুল এর বাল্ব সংরক্ষণ করতে হয়

অত্যন্ত আর্কষনীয় কালার,গঠন ও ঘ্রাণের জন্য লিলিয়াম ফুল সবার পছন্দের তালিকায় শীর্ষে রয়েছে ।‌ সারা পৃথিবী ব্যাপী কাট ফ্লাওয়ার (cut flower) হিসেবে এটি বেশ জনপ্রিয় । লিলিয়াম ফুল কন্দ থেকে হয় এবং এই কন্দ/বাল্ব ফুল ফুটার পর সংরক্ষণ করে রাখতে হয় । অর্থাৎ, একই কন্দ থেকে প্রত্যেক বছর শীতের সময় গাছ হয়ে ফুল ফুটে ।

সূচিপত্র- 

  • লিলিয়াম ফুল এর প্রকারভেদ
  • কেনো বাল্ব/কন্দ সংরক্ষণ করতে হয় 
  • বাল্ব/কন্দ সংরক্ষণ প্রক্রিয়া 
  • কিছু সাধারণ প্রশ্ন ও উত্তর (FAQ)

লিলিয়াম প্রধানত দুই রকমের – 

এশিয়াটিক লিলি – Asiatic Lilies 

ওরিয়েন্টাল লিলি -Oriental Lilies . 

এদের মধ্যে প্রধান পার্থক্য হলো Asiatic Lilies এর গাছ ছোট আকৃতির হয় এবং ফুলে কোন ঘ্রাণ থাকে না । ফুল শীতের শুরুতে ফুটতে আরম্ভ করে এমনকি বছরের যেকোন সময় ফুল ফুটতে পারে। 

আর Oriental Lilies এর গাছ বড় আকৃতির হয় এবং ফুলে ঘ্রাণ থাকে ।‌‌ ফুল অধিক গুচ্ছাকারে হয় এবং ফুল এর রং অধিক গাঢ় হয় । ফুল শীতের মাঝামাঝি থেকে শেষের দিকে ফুটে । 

কেনো বাল্ব/কন্দ সংরক্ষণ করতে হয়: 

সাধারণত লিলিয়াম bulbs/কন্দ থেকে জন্ম নেয় ।‌ 

একটা কন্দ থেকে সাধারণত একটা গাছ জন্ম নেয় এবং ফুল ফুটা শেষ হলে গাছ মারা যায়। তবে গাছ মারা গেলেও মাটির নিচে কন্দ তাজা থাকে এবং এই কন্দ থেকে পরবর্তীতে আবার গাছ হয় । সাধারণত ফুল ফুটা শেষ হলে কন্দ মাটি থেকে তুলে পরবর্তী সিজন এর জন্য সংরক্ষণ করতে হয় ।‌ সঠিক ভাবে কন্দ/বাল্ব সংরক্ষণ করলে বছরের পর বছর একই বাল্ব থেকে ফুল পাওয়া যায় ।

ফুল ফুটার পর বাল্ব মাটিতে রেখে দিলে পঁচে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে এজন্য বাল্ব মাটি থেকে তুলে সংরক্ষণ করে রাখা হয় পরবর্তী সিজনের জন্য ‌। 

বাল্ব/কন্দ সংরক্ষণ প্রক্রিয়া : 

লিলিয়াম শীত কালীন ফুল । তবে রোপণ এর সময় এর উপর নির্ভর করে লিলিয়াম শীতে বা শীতের শেষে ফুল দেয় । 

(এখানে উল্লেখ্য যে, আমি আমার বাগানে শীত ছাড়াও বছরের অন্যান্য সময়েও ফুল ফুটাতে সক্ষম হয়েছি ।)

ফুল ফুটার পর গাছ গুলোর পাতা হলুদ হয়ে শুকিয়ে যেতে থাকে । গাছের অধিকাংশ পাতা হলুদ হয়ে গেলে গাছ মাটি থেকে তুলে বাল্ব আলাদা করে নিতে হয়।

এরপর বাল্ব গুলো কিছু দিন (৩-৫ দিন) ছায়ায় রেখে শুকাতে (air dry) হবে । এসময় বাল্ব এর গায়ে লেগে থাকা মাটি-বালি পরিষ্কার করে দিতে হবে। হাত বা কাঠি দিয়ে যত টুকু সম্ভব পরিষ্কার করতে হবে , পানি দিয়ে ধুয়া যাবে না । 

তারপর পরিষ্কার বাল্ব এর গায়ে কিছু পরিমাণ ছত্রাকনাশক(কার্বন্ডাজিম) পাউডার মিশিয়ে নিতে হবে।

এরপর একটি কালো বা রঙিন পলিথিনে কিছু পরিমাণ হালকা ভেজা ককোপিট নিতে হবে । এই ককোপিটে বাল্ব গুলো ডুবিয়ে পলিথিনের মুখ বন্ধ করে নরমাল ফ্রিজিং এ রেখে দিতে হবে। 

পলিথিন এ কয়েক টা ছিদ্র করে দিতে হবে । মাঝে মাঝে(২-৩ মাস পর পর ) পলিথিন খুলে দেখতে হবে ককোপিট একদম শুকিয়ে গেলো কিনা এবং কোন বাল্ব এ পচন ধরলো কিনা। 

এভাবে অক্টোবর মাস পর্যন্ত রেখে দিতে হবে , অক্টোবর মাসের শুরুর দিকে অংকুর বের হতে শুরু হয় । তখন অংকুরিত বাল্ব গুলো ফ্রিজ থেকে বের করে মাটিতে দিতে হবে । বাল্ব রোপণ এর পর বৃষ্টিতে ভিজানো যাবে না ,পচে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে । 

কিছু সাধারণ প্রশ্ন ও উত্তর (FAQ):

১. মূল বাল্ব এর সাথে ছোট ছোট অনেক বাল্ব জম্ম নেয়, এগুলোর জন্য কি করতে হবে? 

উত্তর: ছোট বাল্ব সংরক্ষণ না করে মাটিতে রোপণ করে দিতে হবে । এগুলো থেকে ছোট গাছ হবে এবং গাছ গুলো ধীরে ধীরে বড় হতে থাকবে । ১-১.৫ বছরের মধ্যে গাছ গুলো ফুল দেওয়ার উপযোগী হবে । 

২. বাল্ব মাটি থেকে তুলে সংরক্ষণ না করে, মাটিতেই রেখে দেওয়া যাবে ? 

উত্তর: অতিরিক্ত বৃষ্টি, পানিতে বাল্ব পঁচে যেতে পারে।  তবে বৃষ্টি পড়ে না এমন জায়গায় মাটিতে রেখে দিলে বাল্ব ভালো থাকবে এবং মৌসুমে যথারিথী গাছ হয়ে ফুল দিবে । 

৩. যেহেতু একটা বাল্ব থেকে একটা গাছই হয় তাহলে বাল্ব তথা গাছ বৃদ্ধি করার উপায় কি ? 

উত্তর: মূল বাল্ব এর সাথে যে ছোট ছোট বাল্ব হয় সেগুলো মাটিতে রোপণ করে দিলে একসময় ফুল দেওয়ার উপযোগী গাছে পরিণত হবে। এভাবে বাল্ব এর সংখ্যা বৃদ্ধি করা যাবে । 

Leave a Reply