ছত্রাকনাশক এর ৫ টি অতি গুরুত্বপূর্ণ ব্যবহার

ছত্রাকনাশক একটি বহুল পরিচিত ফসল রক্ষাকারী পণ্য। গাছের ছত্রাকজনিত বিভিন্ন রোগ দমন ছাড়াও আরো কিছু ব্যবহার রয়েছে এর , যেমন- বীজ-চারা শোধনে, মাটি শোধনে, ব্যাকটেরিয়া-নেমাটোড দমনে ইত্যাদি। এসব কাজে কোন ধরণের ছত্রাকনাশক ব্যবহার করতে হবে ও ব্যবহার করার সঠিক পদ্ধতি নিয়েই আজকের আলোচনা ‌।  

সূচীপত্র – 

ছত্রাকনাশক পরিচিতি

ছত্রাকনাশক এর বিভিন্ন ব্যবহার পদ্ধতি

১. মাটি শোধন

২. বীজ শোধন 

৩. চারা শোধন 

৪. ক্যাকটাস-সাকুলেন্ট, এডেনিয়াম রক্ষা 

৫. ডাল-পালা ছাঁটাই, প্রুনিং পরবর্তী পরিচর্যা

ছত্রাকনাশক পরিচিতি (সংক্ষিপ্ত আলোচনা): 

ছত্রাকনাশক- একটি রাসায়নিক উপাদান যা পরজিবী ছত্রাক, এদের স্পোর,মোল্ড, এছাড়াও কিছু নেমাটোড, ব্যাকটেরিয়া এসব দমনে , কার্যকারিতা হ্রাস করতে এবং পরবর্তীতে যেনো আক্রমণ করতে না পারে এমন প্রতিরোধ ব্যবস্থা গড়ে তুলে । এটি দানাদার, পাউডার এবং তরল পদার্থ হিসেবে পাওয়া যায়। এটি সাধারণত পানির সাথে মিশিয়ে গাছে স্প্রে করা হয় ।

প্রকারভেদ- প্রধানত দুই ধরনের যা বহুল ব্যবহৃত ও সবার পরিচিত। তা হলো- স্পর্শ জনীত ক্রিয়া বা contact fungicide ও অন্তর্বাহী-প্রবাহমান ক্রিয়া সম্পন্ন বা systemic fungicide. 

এছাড়াও ট্রান্সলেমিনার অর্থাৎ পাতার এক পাশে প্রয়োগ করলে পাতা দ্বারা শোষিত হয়ে উল্টা পাশে চলে যায় এমন গুণ সম্পন্ন ছত্রাকনাশকও রয়েছে। 

(সবার পরিচিত ম্যানসার বা saaf fungicide একটি মিশ্রণ যেখানে, contact+systemic উভয় ধরনের ছত্রাকনাশক থাকে।)

Contact fungicides বা স্পর্শ ক্রিয়া সম্পন্ন ছত্রাকনাশক- এগুলো স্পর্শ ক্রিয়া সম্পন্ন অর্থাৎ ছত্রাক বা স্পোর এর স্পর্শে আসা মাত্রই ধ্বংস হয়ে যায় । এগুলো  গাছে একটি প্রতিরোধ আবরণ সৃষ্টি করে পরবর্তীতে ছত্রাক এর আক্রমণ প্রতিরোধ করে ।‌ এই প্রতিরোধ আবরণ গাছে ৭-১০ দিন বা আবহাওয়া ভালো থাকলে ( বৃষ্টি বা কুয়াশামুক্ত ) ১৫ দিন পর্যন্ত কার্যকর থাকতে পারে । এটি গাছের কান্ড বা পাতার রন্ধ দ্বারা শোষিত হয় না , বাইরের অংশে লেগে থেকে একটি স্তর সৃষ্টি করে । এজন্য এটি রোগ হওয়ার আগে প্রতিরোধ হিসেবে প্রয়োগ করতে হয় । উদাহরণঃ       ১. ম্যানকোজেব

২. কপার অক্সিক্লোরাইড

৩. সালফার (৮০%)

Systemic Fungicides বা অর্ন্তবাহি প্রবাহমান ছত্রাকনাশক- এগুলো উদ্ভিদে প্রয়োগ করলে রন্ধ দ্বারা শোষিত হয়ে পুরো উদ্ভিদ দেহে ছড়িয়ে পরে। গাছের ভেতরে কোনো ছত্রাকজনিত সমস্যা হলে তা দমন করে ।‌ এর কার্যকারিতা কিছু দিন স্থায়ী হয় এবং গাছকে ছত্রাক এর হাত থেকে রক্ষা করে। গাছের ভেতরে শোষিত হওয়ায় বৃষ্টির পানি দ্বারা ধূয়ে যাওয়ার চান্স থাকে না । সাধারণত রোগের আক্রমণ দেখা দিলে বা উপসর্গ দেখা দিলে এগুলো প্রয়োগ করা হয় ।উদাহরণঃ  ১. কার্বন্ডাজিম 

২. হেক্সাকোনাজল 

ছত্রাকনাশক এর বিভিন্ন ব্যবহার পদ্ধতিঃ 

ছত্রাকজনিত নানা রকম রোগ দমন, প্রতিরোধ করতে ছত্রাকনাশক ব্যবহার করা হয়। এসব ক্ষেত্রে রোগ হওয়ার আগে বা রোগের উপসর্গ দেখা দিলে গাছে স্প্রে করে ব্যবহার করা হয় । তবে এর বাইরেও  আরও কিছু ভিন্ন ব্যবহার রয়েছে এবং এসবের ব্যবহার পদ্ধতিও ভিন্ন ভিন্ন। 

১. মাটি শোধন – 

পটিং মিডিয়া বা মাটি তৈরির সময় অথবা পুরাতন মাটি পুনঃব্যবহার করতে গেলে মাটি শোধন করার প্রয়োজন পরে । মাটি শোধনের একটি পদ্ধতি হলো রাসায়নিক পদার্থ ব্যবহার করা । এর জন্য দরকার দানাদার কীটনাশক ও ছত্রাকনাশক পাউডার অথবা শুধু ছত্রাকনাশক ব্যবহার করা। 

প্রতি ১২ ইঞ্চি টবের সমান মাটিতে এক গ্রাম কার্বোফুরান জাতীয় দানাদার কীটনাশক ও এক চা চামচ কার্বন্ডাজিম জাতীয় ছত্রাকনাশক ভালো করে মেশানোর পর মাটিতে কিছু পরিমাণ পানি ছিটিয়ে দিয়ে ১৫ দিন রেখে দিতে হবে। তারপর মাটি গাছ রোপণ বা বীজ বপন এর জন্য ব্যবহার করতে হবে। 

আর বেডের মাটি শোধন করতে উপরের ৬ ইঞ্চি মাটি খুঁচিয়ে উলট পালট করে নিয়ে তাতে ম্যানকোজেব জাতীয় ছত্রাকনাশক প্রতি লিটার পানিতে ২ গ্রাম  মিশিয়ে মাটিতে ভালো করে স্প্রে করে দিতে হবে । তারপর ১০-১২ দিন পর বেডে গাছ রোপণ করতে হবে।

২. বীজ শোধন- 

ভিডিও টিউটোরিয়াল দেখুন – 

শাক-সবজি সহ ধান,গম, ভুট্টা,পাট এসব বীজ বপন এর আগে শোধন করে নেওয়া দরকার । বীজে কিছু জীবাণু সুপ্ত অবস্থায় থেকে যায় । এগুলো বীজের অংকুর বের হলে বা ছোট চারা গাছ হলে তখন আবার সক্রিয় হয়ে আক্রমণ করে । বীজ শোধন এর মাধ্যমে – অ্যানথ্রাকনোজ,লিফস্পট,ব্লাইট, উইল্ট, গোড়া পঁচার মতো রোগ দমন ও বীজ বপন পরবর্তী এগুলোর সংক্রমণ কিছুটা প্রতিরোধ করা সম্ভব হয় । ফুল গাছের চারার গোড়া পচাঁ অনেকটা দমন করা সম্ভব বীজ শোধন এর মাধ্যমে। 

শোধন পদ্ধতি- 

বীজ শোধন এর একটি সহজ ও ঝামেলা বিহীন পদ্ধতি হলো ছত্রাকনাশক দিয়ে শোধন । এর জন্য দরকার কার্বেন্ডাজিম গ্রুপের ছত্রাকনাশক। কারণ কার্বেন্ডাজিম একটি সিস্টেমিক ছত্রাকনাশক, এটি গাছের কোষ-কলায় প্রবেশ করে জীবাণু ধ্বংস করে কিন্তু কোষ-কলার কোন ক্ষতি করে না। বেশির ভাগ বাগানি বা কৃষক এর কাছে (কার্বন্ডাজিম+ম্যানকোজেব) জাতীয় মিক্স ছত্রাকনাশক টা থাকে , এটা দিয়েও বীজ শোধন করা যাবে । কারণ এতে কার্বন্ডাজিম রয়েছে। 

প্রথমে ছত্রাকনাশক পানিতে মিশিয়ে নিতে হবে, ১ লিটার পানিতে ২ গ্রাম হারে । ১ লিটার পানি দিয়ে আধা কেজি বীজ শোধন করা যাবে। তাই, অল্প পরিমাণ বীজ শোধন করলে অনুমান করে অল্প পানি নিবেন।

ছত্রাকনাশক পানিতে কতক্ষন বীজ ভিজিয়ে রাখতে হবে এটা নির্ভর করে বীজ বপনের আগে কতক্ষন সময় পানিতে ভিজিয়ে রাখতে হয় । যেসব বীজ শক্ত আবরণের ও বড় সাইজের যেমন- করলা, চিচিঙ্গা,লাউ, পটল, পালং শাক, ধনিয়া, বেগুন, টমেটো,মরিচ এগুলো ১০-১২ ঘন্টা পানিতে ভিজিয়ে রাখার প্রয়োজন হয় । সেক্ষেত্রে প্রথম অর্ধেক সময় রাখতে হবে ছত্রাকনাশক মিশ্রিত পানিতে তারপর বাকি অর্ধেক সময় রাখতে হবে স্বাভাবিক পানিতে। 

সরিষা ও শিম জাতীয় বীজ বেশিক্ষণ পানিতে ভিজিয়ে রাখা লাগে না। যেমন – ফুলকপি, বাঁধাকপি, ওলকপি, ব্রোকলি, বাটিশাক, শিম, বরবটি, সরিষা , মূলা এগুলো ৩-৪ ঘন্টা পানিতে ভিজিয়ে রাখতে হয় । সেক্ষেত্রে প্রথম ২ ঘন্টা ছত্রাকনাশক মিশ্রিত পানিতে রেখে তারপর বাকি সময় স্বাভাবিক পানিতে রাখতে হবে। 

ছত্রাকনাশক পানিতে ভিজিয়ে রাখার সময় পূরণ হয়ে গেলে বীজ গুলো পরিষ্কার পানিতে ধুয়ে নিতে হবে। তারপর স্বাভাবিক পানিতে বাকি সময় রেখে দিতে হবে।

তারপর বীজ গুলো পানি থেকে তুলে বপন করে দেওয়া হবে টিস্যু পেপার বা মাটিতে। 

৩. চারা শোধন –

বেগুন, মরিচ, টমেটো ও কুমড়োজাতীয় সবজির ব্যাকটেরিয়া জনিত ঢলে পরা রোগ দমনে চারা শোধন অত্যন্ত জরুরি। এছাড়াও ছত্রাকজনিত বিভিন্ন সমস্যা যেমন- সবজির গোড়া পঁচা রোগ থেকে মুক্ত থাকতে চারা রোপণের আগে শোধন করে নিতে হবে। 

 চারা শোধন করতে এক লিটার পানিতে ২-৩ গ্রাম (হাফ চা চামচ) কার্বন্ডাজিম জাতীয় ছত্রাকনাশক মিশিয়ে সেই পানিতে চারার গোড়া ১৫-২০ মিনিট ডুবিয়ে রাখতে হবে । তারপর চারা রোপণ করতে হবে। 

এছাড়া ব্যাকটেরিয়া নাষক দিয়েও চারা শোধন করা হয় ‌। এরজন্য চারা রোপণের পূর্বে ব্যাকটাফ (ক্লোরোআইসোব্রোমাইন সায়ানুরিক এসিড) ৩ গ্রাম ১ লিটার পানির সাথে মিশিয়ে দ্রবণ তৈরী করে তাতে অনধিক ৩ বার ৫ মিনিট করে চারার গোড়া ডুবিয়ে রাখতে হয় । তারপর চারা রোপণ করতে হয় ‌।

৪. ক্যাকটাস-সাকুলেন্ট, এডেনিয়াম রক্ষা- 

বর্তমানে সৌখিন বাগানিদের কাছে ক্যাকটাস-সাকুলেন্ট জাতীয় উদ্ভিদ এর বেশ কদর বেড়েছে। এসব উদ্ভিদ আমাদের স্থানীয় নয় ,পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ থেকে আমদানি করা হয়েছে । এগুলো আমাদের আবহাওয়া উপযোগী প্রাকৃতিক পরিবেশের উদ্ভিদ না হওয়া সত্ত্বেও দিনে দিনে আমাদের পরিবেশের সাথে খাপ খাইয়ে আবহাওয়া সহনশীল হয়ে উঠেছে। এজন্য এজাতীয় উদ্ভিদ রক্ষায় ছত্রাকনাশক এর একটি ব্যাপক ভূমিকা রয়েছে। 

ক্যাকটাস-সাকুলেন্ট যত্নের প্রতিটি ক্ষেত্রে ছত্রাকনাশক ব্যবহার করা হয়। 

পটিং মিডিয়া তৈরিতে- এসব গাছের জন্য আলাদা করে মাটি তৈরি করতে হয় । আর প্রতি ৫ কেজি মিডিয়ায় এক চা চামচ ছত্রাকনাশক পাউডার (কার্বন্ডাজিম) ব্যবহার করলেই চলবে। 

রিপটিং করতে- ক্যাকটাস,সাকুলেন্ট ও এডেনিয়াম জাতীয় গাছ পটিং,রিপটিং করার জন্য প্রথমে গাছ গুলো তুলে সম্পূর্ণ মিডিয়া পরিষ্কার করে প্রয়োজন মতো শিকড় প্রুনিং করে নেওয়া হয়। তারপর ছত্রাকনাশক মিশ্রিত পানিতে ১৫-২০ মিনিট চুবিয়ে রাখতে হয় । এর জন্য প্রতি লিটার পানিতে ২-৩ গ্রাম ছত্রাকনাশক পাউডার (কার্বন্ডাজিম) মেশাতে হয় । তারপর গাছ গুলোকে ছায়ায় রেখে শুকিয়ে নেওয়া হয়। 

নিয়মিত যত্নে – আবহাওয়া ভেদে বিভিন্ন সময় বিশেষ করে বর্ষায় অতি আদ্রর্তা যুক্ত পরিবেশে এজাতীয় গাছে ছত্রাকজনিত বিভিন্ন রোগ দেখা দেয়। তখন নিয়মিত ১০-১৫ দিন পর পর ছত্রাকনাশক স্প্রে করে যেতে হয় গাছ রক্ষায় । 

এরজন্য প্রতি লিটার পানিতে ২ গ্রাম পাউডার মেশাতে হয়। ছত্রাকনাশক হিসেবে এক্ষেত্রে ম্যানকোজেব বা কপার অক্সিক্লোরাইড ব্যবহার করতে হয় । আর একই ধরনের ছত্রাকনাশক বারে বারে ব্যবহার না করে মাঝে মাঝে ভিন্ন রকম ব্যবহার করতে হবে। এজন্য ম্যানকোজেব এর পাশাপাশি কপার অক্সিক্লোরাইড ব্যবহার করা যেতে পারে। 

আমাদের দেশে বহুল ভাবে ম্যানসার বা সাফ ব্যবহার করা হয়। এগুলো মিক্স জাতীয় ছত্রাকনাশক যাতে কার্বেনডাজিম+ম্যানকোজেব থাকে। ছত্রাক থেকে গাছ কে রক্ষা করতে কার্বেনডাজিম এর প্রয়োজন পরে না শুধু ম্যানকোজেব হলেই চলে। পচন বা রোগ দেখা দিলে তখন কার্বেনডাজিম স্প্রে করতে হবে ‌। তবে উভয় গুণ সম্পন্ন ছত্রাকনাশক স্প্রে করলে অনেকটা নিশ্চিত থাকা যায় । 

সাজেশন – বারে বারে একই ধরনের ছত্রাকনাশক ম্যানসার বা সাফ ( কার্বেনডাজিম+ম্যানকোজেব) ব্যবহার না করে ভিন্ন ভিন্ন ব্যবহার করা প্রয়োজন। কারণ একই ধরনের ছত্রাকনাশক দীর্ঘ দিন ব্যবহার করলে গাছে তার কার্যকারিতা হ্রাস পাওয়ার একটা সম্ভাবনা থাকে। এজন্য বিকল্প হিসেবে (মেটালেক্সিল +ম্যানকোজেব) জাতীয় মিক্স ছত্রাকনাশক ব্যবহার করা যেতে পারে। ) 

৫. ডাল-পালা ছাঁটাই , প্রুনিং পরবর্তী পরিচর্যা –

গোলাপ,লেবু জাতীয় গাছ -মাল্টা,কমলা,পাতি লেব এসবের একটা মারাত্মক রোগ হলো ডাইব্যাক । কাটা ডালের অগ্রভাগ দিয়ে এই রোগ সহজে ছড়িয়ে পরতে পারে । এজন্য এসব গাছের ডাল-পালা ছাঁটাই করার পর অবশ্যই কাটা স্থানে ছত্রাকনাশক এর প্রলেপ লাগিয়ে দিতে হবে। 

ক্যাকটাস থেকে বাড/কুঁড়ি আলাদা করে নেওয়ার পর উক্ত স্থানে, সাকুলেন্ট এর কাটিং করা হলে কাটা স্থানে, এডেনিয়াম গাছের ডাল ছাঁটাই করলে কাটা স্থানে, এসব ক্ষেত্রেও ছত্রাকনাশক এর প্রলেপ লাগিয়ে দিতে হবে। কারণ এসব উদ্ভিদ গুলোতে ছত্রাকজনিত পঁচন রোগ গুলো সহজেই হয়ে থাকে। 

এসকল ক্ষেত্রে প্রলেপ দেওয়ার জন্য কপার অক্সিক্লোরাইড জাতীয় ছত্রাকনাশক ব্যবহার করতে হবে। অল্প পানির সাথে কিছু পরিমাণ পাউডার নিয়ে পেস্ট এর মতো তৈরি করে তা ব্রাশ বা তুলির সাহায্যে কাঁটা স্থানে প্রলেপ লাগিয়ে দিতে হবে। 

Leave a Reply